বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৫০ অপরাহ্ন

গঙ্গাচড়ায় তিস্তা বাঁধ সংস্কার কাজে ভূমিহীনরা উচ্ছেদ হলেও বহাল তবিয়তে ধনাঢ্যরা

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি::

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সংস্কার কাজ করার লক্ষে বাঁধের দুই পাশে বসবাসকারী ভূমিহীনদের কাঁচা ঘর উচ্ছেদ হলেও ধনাঢ্যদের পাকা বাড়ি রয়েছে বহাল তবিয়তে। এঘটনায় ভূমিহীনরা একজোট হয়ে ধানঢ্য’র বাড়ি উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান বড়াইবাড়ি গাটুপাড়া গ্রামে।

অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ৪-৫ মাস থেকে শুরু হয়েছে তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের সংস্কার কাজ। ওই বাঁধের দুই পাশে খাস জমিতে রয়েছে হাজার হাজার নদী ভাঙ্গনের শিকার ভূমিহীনদের ঘর বাড়ি। বাঁধের খাস জমিতে ভূমিহীনদের সাথে রয়েছে বেশকিছু ধনাঢ্য ব্যক্তির ঘর বাড়ি। সংস্কার কাজের জন্য কাজ শুরুর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাইকিং করে বাঁধের দুই পাশে খাস জমিতে থাকা সকল ঘর বাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলে। এতে বিপাকে পরে ভূমিহীনরা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঘর বাড়ি অন্যের জমিতে সরিয়ে নেয়। যারা সরায়নি তাদের ঘর বাড়ি স্কাভেটার মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই পরিবারগুলোর অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন আলমবিদিতর ইউনিয়নের গাটুপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ভূমিহীনদের ঘর মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে দিলেও ওই স্থানে একটি পাকা বাড়ি রয়েছে বহাল তবিয়তে। বাড়িটির মালিক ওই গ্রামের মৃত তনে মামুদের ছেলে একরামুল হক ও নজিমুল হক। ভূমিহীনদের ঘর বাড়ি উচ্ছেদ হলেও পাকা বাড়িটি রাখার কারণে ভূমিহীনরা একজোট হয়ে সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘর বাড়ি উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীন দুলু, মঞ্জুম, মোজাম্মেল হকসহ আরো অনেকে জানান নদী ভাঙ্গনে বসতভিটা হারিয়ে আমরা দীর্ঘদিন থেকে বাঁধের পাশে খাস জমিতে বসবাস করছি। সংস্কার কাজ সংশ্লিষ্টরা আমাদের কাঁচা ঘরগুলো মেশিন দিয়ে ভাঙ্গলেও পাকা বাড়িগুলো ভাঙ্গছেন না। একারণে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তারা আরো বলেন পাকা বাড়ির মালিক একরামুল ও নজিমুল কাজ সংশ্লিষ্টদের ২ লক্ষ টাকা উৎকোচ দিয়ে বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করছেন। যা এলাকায় সবারই জানা। এবিষয়ে ওই কাজের সাব ঠিকাদার রাসেলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান বলেন, ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা ২ লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করছেন বলে এলাকাবাসী আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। বাঁধের ভালো কাজ করার স্বার্থে পাকা হোক আর কাঁচা হোক খাস জমিতে কোন বাড়ি থাকবে না। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com